আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্ম হয় ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ। যদিও রাষ্ট্রের অন্যতম উপাদান স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয় ১০ এপ্রিল কিন্তু সেই সময় এই ঘোষণাপত্রটিকে ২৬শে মার্চ হতেই কার্যকর করা হয়। বাংলাদেশের জনগনের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র তৈরি করা হয়।
সেই সময় মুজিবনগরে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ সরকার যেহেতু পাকিস্থানীরা বাংলাদেশের উপর একটি অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে সুতরাং এই যুদ্ধে তাদেরকে প্রতিরোধের স্বীদ্ধান্ত নেয় এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়। আর আইন অনুযায়ী এই যুদ্ধ শেষ হয় যখন পাকিস্তানীরা আত্মসমর্পন করে সেই সময় অর্থাত ১৬ই ডিসেম্বর।
কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সংবিধানের প্রস্তাবনায় উল্লেখ আছে ”জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রাম” কথাটি।
এই কথাটির ব্যাখা এসেছে রেজিস্ট্রার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বনাম ডক্টর সাজ্জাদ হোসেন মামলায়। এই মামলায় বিচারপতি বজলুল হায়দার চৌধুরী বলেন ”এটা দাবী করা ঠিক হবে না যে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এই শেষ হয়ে গেছে। ১৯৭১ ছিল ইতিহাসের একটা অংশ যেখানে এই সংগ্রামের শেষ হবে একটা সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। কারন আমাদের রাষ্ট্রের মুল লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি সমাজের প্রতিষ্ঠা যেখানে আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, স্বাধীনতা, সমতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।”
বাংলাদেশ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করা। আমরা একটি যুদ্ধে জয়লাভ করেছিলাম যেটা ছিল জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের একটি অংশ মাত্র। কিন্তু যে পথের শুরু হয়েছে তার শেষ হতে এখনো অনেক দেরি। এই দেশের লক্ষ মানুষ যেই স্বপ্ন নিয়ে হাসিমুখে জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছিল সেই স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই একমাত্র স্বাধীনতাকে অর্থবহ করা সম্ভব। আর এটাই একমাত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
একটি ঐক্যবদ্ধ যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা যেভাবে সংগ্রামের শুরুতে জয়লাভ করেছি। ইনশাআল্লাহ ঐক্যবদ্ধভাবে স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমাদের মুক্তি সংগ্রামের জাতীয় লক্ষ্য পুরন হবে। সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা!