1. admin@thedailyintessar.com : rashedintessar :
বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন

ট্রাম্পের বিদায়: লোকরঞ্জনবাদ থেকে মুক্তি কতদূর ?

ফারহান আরিফ :
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২১

ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস ত্যাগের মধ্যে দিয়ে আপাতত লোকরঞ্জনবাদী বা জনতুষ্টিবাদী বড় ফ্রাঙ্কেনস্টাইনটির পতন ঘটলো। গতকাল ট্রাম্পের মেলানিয়াকে সাথে নিয়ে হোয়াইট হাউস ত্যাগ করাকে আপাতদৃষ্টে এক রকমের পজিটিভ বার্তা বলেই মনে করতে চাই।

কিন্তু আশঙ্কাটা হচ্ছে, প্রবল শক্তিশালী ট্রাম্পের সামনে আমেরিকার গণমাধ্যম ও অপরাপর প্রতিষ্ঠানসমূহ যে সাহসী ভূমিকা রেখেছে অন্যত্র সেটার অস্তিত্ব কোথায়? এ ধরণের শক্তিশালী ন্যয়চর্চা আমাদের এই দেশে তো বটেই, এমনকি বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশসমূহেও বিরল। আর এ কারণেই ট্রাম্পের প্রস্থানের সাথে সাথে বিশ্বের নানা প্রান্তের লোকরঞ্জনবাদী শাসকদের পতন ঘটবে এটা মনে করা দুষ্কর। আমেরিকায় আমরা ন্যয় ও সত্যের পক্ষে রাষ্ট্রের থার্ড আইগুলোর যে সক্রিয়তা দেখেছি সেটা অপরাপর দেশসমূহে আশা করা বোকামিই হবে। সংবাদ মাধ্যমের কথা যদি বিবেচনা করি, ক্ষমতাসীন ব্যক্তি যত ক্ষমতাবানই হোন না কেন, তাঁর কাছে জবাবদিহিতা চাইতে পারাই হচ্ছে সাংবাদিকতার মৌলিক দায়িত্ব। আমেরিকার মিডিয়া এক্ষেত্রে সফল। একই সাথে কোন কাজে সত্য-মিথ্যার ফারাক করতে না পারা, কিংবা না চাওয়ার প্রবণতা থেকেও তারা দূরে থেকেছে। যে কারণে অনর্গল মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো এবং অনমনীয় ও হিংসাত্মক মনোভাব দেখানো সত্ত্বেও ট্রাম্পের শেষ রক্ষা হয় নি। প্রশাসনযন্ত্রও দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত রেখেছে। আমাদের দেশের মত ব্যক্তিতোষণ বা দলান্ধতার পরিবর্তে রাষ্ট্রতোষণ ও দায়ীত্বশীলতা দেখিয়েছে। এই ধরণের শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামোর অনুপস্থিতির ফলে আমরা এখনো স্বপ্ন দেখতে পারি না। তবে ট্রাম্পের এই প্রস্থানের মাধ্যমে অন্তত জনতুষ্টিবাদীদের আত্মবিশ্বাসের ভীত্তিমূলে কাঁপুনি উঠেছে এটা নিশ্চিত। এটা বলার কারণ হচ্ছে, মানুন বা না মানুন, সাম্প্রতিক বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রটির সর্বোচ্চ আসনে ট্রাম্পের মত এমন একজন অথর্ব শাসকের উপস্থিতি ছিল বাকি বিশ্বের লোকরঞ্জনবাদী শাসকদের আত্মবিশ্বাসের কারণ।

হাজারো প্রশ্ন থাকলেও বর্তমান বিশ্বের গণতান্ত্রিক কাঠামোতে আমেরিকার এডভোকেসিই মুখ্য। এর বাইরে আপাতত কেউ নেই। বিশ্ব রাজনীতির হালচাল আমেরিকাকে ঘিরেই আবর্তিত হয়- সেটা হোক বিরুদ্ধবাদ থেকে কিংবা তাকে সমর্থন করে। আর সে কারণেই কিনা ট্রাম্প প্রশাসনের নির্লিপ্ততা প্রভাব ফেলেছে বহি:স্থ রাজনীতিতে। ফলস্বরূপ বিশ্বের নানা জায়গায় নির্বাচন ব্যবস্থার উপর খড়গহস্ত হওয়া সত্ত্বেও কুশীলবরা  নির্বিঘ্ন দিন কাটাচ্ছে। উপরন্তু ট্রাম্পের অনুসরণে নির্জলা মিথ্যা ও মনোরঞ্জক রাজনীতি করে সমগ্র জনপদগুলোকে করে রেখেছে নাটকের রঙ্গমঞ্চ। ট্রাম্পের পরাজয়ে আপাতত স্বস্তি আসলেও এর স্থায়ীত্ব কতদূর সেটা এখনই বলা কঠিন। তবে সুশাসন ও নীতিবান শাসনপ্রত্যাশীরা আশা রাখতেই পারি। অবশ্য এক্ষেত্রে আমাদের তাকিয়ে থাকতে হবে রাষ্ট্রাভ্যন্তরীণ সংবাদ মাধ্যমের নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক অবস্থান, এবং প্রশাসনযন্ত্রের ব্যক্তিবাদ ও দলান্ধতার ঊর্ধে উঠে দেশের পক্ষে অবস্থান গ্রহণের প্রতি।

সংবাদটি সংরক্ষন করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন..

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও খবর...

© All rights reserved  2021 The Daily Intessar

Developed ByTheDailyIntessar
error: Content is protected !!