পাথর বিছানো বিশাল বিছানায় জলের স্বত:স্ফুর্ত আনাগোনা। পাশেই নীলচে পাহাড়ের সারি। যায়গার নাম বিছনাকান্দি। স্বর্গের বিছানা বিছনাকান্দি। এমন অপরূপ সৌন্দর্যগাঁথা দেখার জন্য সড়ক পথে একরাতে চলে এলাম সিলেট। মেঘাবৃত আকাশ আর বৃষ্টিঝরা দিন না হলে বিছনাকান্দির সৌন্দর্য ঠিক বোঝা যায়না! অবিশ্বাস্য সৌন্দর্যের সমাহার। কল্পনাও করতে পারিনি। বিস্ময়কর মানে এতটাই বিস্ময়কর। কাছেই দাঁড়িয়ে মেঘে ঢাকা মেঘালয় পর্বতমালা আর সে পাহাড় থেকে প্রবাহিত সু-শীতল ঝর্নাধারার তীব্র প্রবাহ।
এখানে পাথরে ভরা পুরো এলাকা। পানিতে বিছানো রয়েছে মোটা-শক্ত, ছোট-বড় হাজার কোটি পাথর। সে সব পাথরের কোনোটাতে মোটা ঘাসের আস্তরন। এ সব পাথর মেঘালয় পর্বতমালার ওপর থেকে প্রবাহিত ঝর্নার ধারায় চলে এসেছে পিয়াইন নদীর বিছনাকান্দি অংশে। এক মনোরম যায়গা বিছনাকান্দি। মুগ্ধ চিত্তে চেয়ে দেখি চারপাশ। তারপর ঝাঁপিয়ে পড়ি পাথর ভরা পিয়াইন নদীর সু-শীতল সেই জলে, শরীর এলিয়ে দেই পাথর জলের বিছানায়। যে বিছানা ছেড়ে কোন কালেই উঠতে ইচ্ছে করবেনা!
প্রয়োজনীয় তথ্য
বিছনাকান্দির এমন সৌন্দর্য বরষা চলে গেলে বা পানি কমে গেলে আর থাকেনা। তখন এটা হয়ে যায় একটা মরুদ্যান। পাথর বহন করার জন্য এখানে চলে অজস্র ট্রাক আর ট্রাকটর। সুতরাং অক্টোবর পর্যন্ত বিছনাকান্দি যাবার মোক্ষম সময়। বিছনাকান্দি যাবার কয়েকটা পথ রয়েছে। আপনি চাইলে নদী পথে যেতে পারেন। আবার সড়কপথে নিজস্ববাহন, সিএনজি চালিত অটো রিকসা কিংবা লেগুনা ভাড়া করে দল বেঁধে যেতে পারেন। নদী পথে গেলে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে পাংখুমাই। সেখান থেকে ট্রলারে চেঁপে বিছনাকান্দি। পাংখুমাই হয়ে বিছনাকান্দি গেলে বাড়তি পাওনা এখানকার বিশাল ঝর্না আর পিয়াইন নদীর অপরূপ রূপসূধা।
পাংখুমাই যেতে সময় লাগে দেড়ঘন্টা। সেখান থেকে বিছনাকান্দি আরও দেড় থেকে দুই ঘন্টার পথ। সড়কপথ হলে সিলেট শহর থেকে যে কোন বাহনে চেপে চলে যান হাদারপার বাজার। সেখান থেকে নৌকায় বিছনাকান্দি।