1. admin@thedailyintessar.com : rashedintessar :
আল মাহমুদের উপর আক্রোশ, মিস ইনফরমেশন ক্যাম্পেইনের কারণেই! - The Daily Intessar
বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৬ অপরাহ্ন

আল মাহমুদের উপর আক্রোশ, মিস ইনফরমেশন ক্যাম্পেইনের কারণেই!

ফারহান আরিফ :
  • Update Time : সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

“কোনো এক ভোরবেলা, রাত্রিশেষে শুভ শুক্রবারেমৃত্যুর ফেরেস্তা এসে যদি দেয় যাওয়ার তাকিদ;অপ্রস্তুত এলোমেলো এ গৃহের আলো অন্ধকারেভালোমন্দ যা ঘটুক মেনে নেবো এ আমার ঈদ।”

কবি আল মাহমুদ পূর্ববঙ্গের মুসলমানদের ভাষা গুলোকে কবিতায় তুলে এনেছেন | আমরা বড় হয়েছি বাবা মাকে আব্বা আম্মা ডেকে – যেই জেনারেশনের সাথে বড় হয়েছি – কেউ ডেকেছে বাবা মা – কিন্তু অধিকাংশই ডেকেছে আব্বা আম্মা| এই ডাকে কোন সাম্প্রদায়িকতা ছিল না – এই ডাকে-ছিল আমাদের পূর্ববঙ্গীয় কালচারের এক্সপ্রেশন | কিন্তু আমরা যেই সাহিত্য দিয়ে লালিত হয়েছি – সেই সাহিত্যে আব্বা আম্মার কোন স্থান ছিল না | পূর্ববঙ্গীয় মুসলমান বাঙালিকে সাহিত্যে নিয়ে আসতে চেষ্টা করেছেন এর আগে কবি ফররুখ আহমেদ, তালিব আহমেদ, বন্দে আলী মিয়া প্রমুখ – কিন্তু জীবনান্দ দাসের পর পূর্ববঙ্গের প্রধানতম কবি আল মাহমুদ যখন লিখেন –

“আম্মা বলেন, পড়রে সোনা

আব্বা বলেন, মন দে;

পাঠে আমার মন বসে না

কাঁঠালচাঁপার গন্ধে।

আমার কেবল ইচ্ছে জাগে

নদীর কাছে থাকতে,

বকুল ডালে লুকিয়ে থেকে

পাখির মতো ডাকতে।

সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়েকর্ণফুলীর কূলটায়,

দুধভরা ঐ চাঁদের বাটি

ফেরেস্তারা উল্টায়।

তখন কেবল ভাবতে থাকি

কেমন করে উড়বো,

কেমন করে শহর ছেড়ে

সবুজ গাঁয়ে ঘুরবো !

তোমরা যখন শিখছো পড়া

মানুষ হওয়ার জন্য,

আমি না হয় পাখিই হবো,

পাখির মতো বন্য।”

—- তখন তিনি স্ট্যাটাস কো তে বিশাল ধাক্কা দেন – পূর্ববঙ্গীয় মসুলমানদের ভাষায় যখন সোনালী কাবিনের মতো মাস্টারপিস সৃষ্টি হয় – বাংলা কালচারের বুদ্ধিবৃত্তিক ভরকেন্দ্র হুমকির মুখে পরে | আল মাহমুদ হয়ে ওঠেন একটা প্যারালাল নুতন ধারার অসম একক যোদ্ধা !

আল মাহমুদের উপর আক্রোশ, মিস ইনফরমেশন ক্যাম্পেইনের কারণেই!

কবিরা হিসেবে করে কথা বলতে পারে না – কবিরা সহজেই ইম্প্রেশনড হয়ে যায় – কবিরা মাপা মাপা কাটা কাটা কথার ধূর্ত কুশীলব না | আল মাহমুদ সম্মুখ সমরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন | স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিবাদী এডিটর হিসেবে কারাবরণ করেছেন | উনি যদি কোন একসময়ে ট্রানজিয়েন্টলি ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় বিশ্বাসী হয়ে থাকেনও অথবা কিছু বলে থাকেন তাতে কি আসে যায়? একজন কবি যদি তার কবিতায় উগ্র সশস্ত্র সমাজতন্ত্র প্রমোট করেন তাতে কবির দোষ হয় না, নির্মলেন্দু গুন্, মহাদেব সাহা, জাফর ওয়াজেদ রা যখন ক্লিয়ারলি একটা রাজনৈতিক পক্ষ নিয়ে ফেলেন তারা আরো কুলীন হয়ে ওঠেন কবিকূলে তাহলে আল মাহমুদ কোরানে স্বস্তি খুঁজে পেলে আকাশ ভেঙে পরে কেন?

ভেঙে পরে কারন আল মাহমুদ একটা বিশাল শক্তির বিরুদ্ধে একা দাঁড়িয়েছেন | হিব্রু ইডিস অথবা মূলধারার পশ্চিমা সাহিত্যের উল্টো পথে চলে – বাংলা সাহিত্যের টিপি কাল ভিলেন হচ্ছেন গ্রামের ইমাম| এই স্ট্যাটাস কো তে একজন লিখক তার গ্রন্থে নামকরণে আহ্নিক কথাটা ব্যবহার করতে যতটা কমফোর্টেবল হবেন, আকিকা শব্দটা ব্যবহারে ততটা ভীত হবেন | যদিও এই লিখকের ৯০ % পাঠক আহ্নিক কি তা জানে না কিন্তু ওযু কি তা জানে | এই কালচারাল স্টিরিওটাইপ এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো স্পর্ধা করেছিলেন আল মাহমুদ |

১৫ই ফেব্রুয়ারি কবি আল মাহমুদের মৃত্যুবার্ষিকী। “সোনালী কাবিনে”- এর স্রষ্টাকে আল্লাহ জান্নাতবাসী করুন।

সংবাদটি সংরক্ষন করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন..

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও খবর...

© All rights reserved  2021 The Daily Intessar

Developed ByTheDailyIntessar