1. admin@thedailyintessar.com : rashedintessar :
ইতিহাস-ঐতিহ্যের নিদর্শন মহেড়া জমিদার বাড়ি। মির্জাপুর, টাঙ্গাইল। - The Daily Intessar
বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন

ইতিহাস-ঐতিহ্যের নিদর্শন মহেড়া জমিদার বাড়ি। মির্জাপুর, টাঙ্গাইল।

জাবের হোসেন :
  • Update Time : শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

ইতিহাস-ঐতিহ্যের নিদর্শন মহেড়া জমিদার বাড়ি বৃটিশ শাসন নেই, নেই জমিদারের প্রতাপ, শুধু আছে তাদের সৃতি বিজড়িত কীর্তি। তেমনি একটি স্থাপত্য নিদর্শন হলো মির্জাপুর মহেড়া জমিদার বাড়ি। ঢাকার খুব কাছে সুন্দর একটা স্থাপনা। জায়গাটা বেড়ানোর জন্য বা পিকনিকের জন্য একটা আদর্শ স্থান।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত মহেড়া জমিদার বাড়ি। ঢাকা-টাংগাইল জাতীয় মহা সড়কের জামুর্কী হতে টাংগাইল-এর দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার উত্তরে এবং টাংগাইল থেকে ঢাকার দিকে নাটিয়া পাড়া বাসস্ট্যান্ড হতে প্রায় দুই কিলোমিটার দক্ষিণে ডুবাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছ থেকে মহা সড়ক-এর পূর্ব-দক্ষিণ দিকে একটু আঁকা-বাঁকা রাস্তায় প্রায় ০৪(চার) কিলোমিটার দুরত্বে মহেড়া জমিদার বাড়ী/মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার অবস্থিত। কাছাকাছি আসলে একটু খেয়াল রাখবেন, ঢাকা-টাংগাইল জাতীয় মহা সড়কে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার-এর দিক নির্দেশনা দেখতে পাবেন। মহেড়া জমিদার বাড়ি কালের সাক্ষি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জমিদারদের শাসন ও শেষণের ইতিহাস নিয়ে।

১১শ’ ৭৪ শতাংশ জমির উপর অবস্থিত মহেড়া জমিদার বাড়ি। এই জমিদার বাড়িতে রয়েছে সুবিশল ৩টি প্রধান ভবন। সাথে রয়েছে কাচারী ঘর, নায়েব সাহেবের ঘর, গোমস্তাদের ঘর, প্রার্থনার জন্য মন্দির এবং জমিদারদের দাস-দাসিদের থাকার জন্য কয়েকটি ঘর। ভবনগুলোতে রয়েছে সুউচ্চ প্রাচির। বাড়িতে প্রবেশের জন্য রয়েছে ২টি প্রবেশ দ্বার। সামনে রয়েছে গোছল করার জন্য বিশাল দীঘি। প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞের মতে ভবনগুলোর নির্মাণ শৈলি রোমান, মোঘল, সিন্দু খেকুদের সাথে মিল রয়েছে। চুন শূরকী আর ইটের সমন্বয়ে ভবনগুলোর কারুকাজ যে কোন দর্শনার্থীর মন কেনে নেয়।

জমিদার বাড়িটি আকর্ষণীয় করার জন্য তৎকালীন জমিদাররা বাড়ির সামনে হরেক রকম ফুলের বাগান, সারি সারি নারিকেল ও সুপারী গাছ রোপন করেন। এখানকার বাসিন্দা বয়োবৃদ্ধ গয়েজ মিয়ার সাথে আলাপ করে জানা যায়, কালিচরণ সাহা ও আনন্দ সাহা নামে ২ ভাই কলকাতায় লবন ও ডালের ব্যবসা করে প্রচুর টাকা পয়সা রোজগার করে চলে আসেন মহেড়া গ্রামে। মহেরা গ্রামে এসেই তারা এই সুবিশাল বাড়িটি নির্মাণ করেন। বাড়ি নির্মাণ করার পর এরা মহেড়া গ্রামের গরীর মানুষের কাছে টাকা দাদন খাটাতে থাকে এবং গড়তে থাকে টাকার পাহাড়। কেউ তাদের দাদনের টাকা দিতে অপারগ হলে তাকে শাস্তি দেয়া হতো এবং তাদের জমি ও সম্পদ নিলাম করে নিয়ে নিতো তারা।

পরবর্তিতে বৃটিশ সরকার জমিদার প্রথা চালু করলে কালীচরণ সাহা ও আনন্দ সাহার পুত্ররা করটিয়ার ২৪ পরগনার জমিদারদের নিকট থেকে একটি অংশ বিপুল অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে নেন। শুরু হয় জমিদারী শাসন ও শোষন।

কালীচরণ সাহা ও আনন্দমোহন সাহার উত্তরাধিকারী রাজেন্দ্র রায় চৌধুরী পর্যায় ক্রমে জমিদারী পরিচালনা করেন। এসব শাসকগণ এলাকায় বিদ্যালয়, রাস্তা ঘাট, পানির ব্যবস্থা সহ অনেক জনকল্যাণমূলক কাজ করেন।

বৃটিশ শাসনের শেষের দিকে জমিদার শাসন বাতিল হয় এবং পরবর্তিতে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভগের পর জমিদারদের অধিকাংশই ভারতে চলে যান। অবশিষ্ট যারা ছিলেন তারাও ১৯৭১ সালে স্বধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে হানাদার বাহিনীর নির্মম শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত এই অপরুপ নির্মাণ শৈলি পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তৎকালীন রাষ্টপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মান্নান পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।বর্তমানে ভবনগুলো সংস্কার করা হয়েছে।

সংবাদটি সংরক্ষন করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন..

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও খবর...

© All rights reserved  2021 The Daily Intessar

Developed ByTheDailyIntessar