1. admin@thedailyintessar.com : rashedintessar :
মুজিবনগর : বাঙালি জাতিসত্তার রাষ্ট্রীয় পরিচয়ের সূচনাভূমি। - The Daily Intessar
বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:১২ পূর্বাহ্ন

মুজিবনগর : বাঙালি জাতিসত্তার রাষ্ট্রীয় পরিচয়ের সূচনাভূমি।

জাবের হোসেন :
  • Update Time : শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

বাঙালি জাতিসত্তার রাষ্ট্রীয় পরিচয়ের সূচনাভূমি মুজিবনগর। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রতিরোধের প্রথম প্রহর মুজিবনগর। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকারের শপথ পাঠ হয়েছিল এখানেই। সর্বোপরি যুদ্ধকালীন বাংলাদেশের রাজধানী মুজিবনগর। তাই নিজের অস্তিত্বকে জানতে জন্মকালীন বাংলাদেশের ইতিহাসকে নতুন করে আবিস্কার করতে এবং আত্মপরিচয়ের সেই ইতিহাসকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে মুজিবনগর হতে পারে আমাদের সবার কাক্সিক্ষত গন্তব্য। সুপ্রিয় পাঠক আসুন জেনে নেওয়া যাক মুজিবনগর ভ্রমণের আদ্যোপ্রান্ত।

প্রায় আশি একর জায়গার ওপর দাঁড়িয়ে আছে মুজবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্স। আম্রকাননের জায়গার পরিমাণ প্রায় ৪০ একরের মতো। এখানে আমগাছ রয়েছে ১ হাজার ৩০০টি।  তিনটি ধাপে ছয় স্তরবিশিষ্ট দুটি গোলাপবাগান, যা ছয় দফা আন্দোরনের রূপক।

অবস্থান: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জনপদ মুজিবনগর। পূর্ববর্তী প্রশাসনিক বিভাজন অনুযায়ী বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমায় অবস্থিত। বর্তমান প্রশাসনিক পরিচিতি অনুযায়ী মেহেরপুর জেলা, মুজিবনগর উপজেলা।উত্তরে মেহেরপুর সদর উপজেলা ও ভারত, দক্ষিণে মুজিবনগর উপজেলা ও ভারত, পূর্বে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা এবং পশ্চিমে ভারতের অবস্থান।

নামকরণ: মুজিবনগরের পূর্ববর্তী নাম ছিল বৈদ্যনাথতলা। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকারের শপথ গ্রহণের পরে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ দেশি-বিদেশি সাংবাদিক এবং সমবেত জনতার সামনে ৩০ মিনিটের এক উদ্দীপনাময় ভাষণ প্রদান করেন। তিনি বলেন, আজ থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী হবে এ বৈদ্যনাথতলা এবং এর নতুন নামকরণ হবে মুজিবনগর। সেদিন থেকেই বৈদ্যনাথতলা মুজিবনগর নামে পরিচিত।

ভ্রমণের সময়: ক্রান্তীয় আর্দ্রপ্রায় জলবায়ু অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় উষ্ণ গ্রীষ্মকাল ও শুষ্ক শীতকাল বিরাজ করে। তাই মুজিবনগর ভ্রমণের উপযুক্ত সময় অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে বছরের যে কোনো সময়েই ভ্রমণ করা যেতে পারে।

যেভাবে যাবেন : রাজধানী ঢাকা থেকে মেহেরপুর সদরের দূরত্ব ৩১২ কিলোমিটার। সড়কপথে বিভিন্ন সংস্থার পরিবহনে ঢাকা থেকে মেহেরপুর পৌঁছাতে ৬ ঘন্টা ৩০ মিনিট থেকে ৭ ঘন্টা ৩০ মিনিট সময় লেগে যেতে পারে। যাতায়াতের দুটি পথ রয়েছে। গাবতলী থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া হয়ে মেহেরপুর অথবা গাবতলী থেকে যমুনা সেতু হয়ে মেহেরপুর গমন। অতঃপর মেহেরপুর থেকে লোকাল বাসযোগে মুজিবনগর গমন। দূরত্ব প্রায় ১৬ কিলোমিটার। প্রধান প্রধান পরিবহন সংস্থা: পূর্বাশা, চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স, দর্শনা ডিলাক্স, এম. এম. পরিবহন, মেহেরপুর ডিলাক্স, শ্যামলী পরিবহন, জে.আর পরিবহন প্রভৃতি। তবে জে.আর পরিবহনের কিছু গাড়ি সরাসরি মুজিবনগরে আসা-যাওয়া করে। ভ্রমণের শুরুতে এটি জেনে নিতে ভুলবেন না।

রাত্রি যাপন : মুজিবনগর কমপ্লেক্সের অদূরে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের পর্যটন মোটেলে রাত্রি যাপন করতে পারেন। জেলা পরিষদ সচিবের পূর্ব অনুমতি সাপেক্ষে রেস্ট হাউস ‘সূর্যোদয়ে’ও থাকতে পারেন যা মুজিবনগর কমপ্লেক্স থেকে হাঁটা দূরত্বে অবস্থিত।

যা দেখবেন : বাঙালির জাতিসত্তা অন্বেষণ ও প্রতিষ্ঠার যে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল ১৯৫২ থেকে, ১৯৭১ এর ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে তার রাজনৈতিক অভিষেক হয়েছিল। বলা যায় ১৯৭১ এর ১৭ এপ্রিল এখানে বাঙালি জাতির জন্ম হয়েছিল। তাই কোনো কৃত্রিম স্থাপত্যকর্ম বা মনুমেন্ট দর্শন করতে না চাইলেও নয় মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই আবেগ ও ইতিহাসকে ধারণ করতে এবং বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সূচনা ভূখ-টির স্পর্শ পেতে আপনাকে আসতে হবে মুজিবনগরে।

স্থাপনাসমূহ  :১. মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ ২. মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স ৩. বাংলাদেশের মানচিত্র৪. মিউজিয়াম ৫. আমবাগান৬. সীমান্তসতর্কতা: স্মৃতিসৌধ দর্শনে গিয়ে জুতাসহ বেদীতে উঠবেন না। মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্সের দেয়ালে কোনো কিছু লিখবেন না। সীমান্তে গিয়ে অতি উৎসাহী হয়ে সীমান্ত অতিক্রম করবেন না। পর্যটন মোটেল ও জেলা পরিষদ রেস্ট হাউসে আগাম বুকিং না দিয়ে যাবেন না। সুতরাং, পাঠক যে কোনো অবসর পেলেই ঘুরে আসুন মুজিবনগর।

সংবাদটি সংরক্ষন করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন..

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও খবর...

© All rights reserved  2021 The Daily Intessar

Developed ByTheDailyIntessar