যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাআতের সঙ্গে পড়বে ওই ব্যক্তি সারাদিন আল্লাহর জিম্মায় থাকবে। আবার যে ইশার নামাজ জামাআতে পড়বে সেও সারা রাত আল্লাহর জিম্মায় থাকবে। ইশার নামাজ জামাআতে পড়া সম্ভব হলেও অনেক সময় ফজরের নামাজের জন্য জেগে ওঠা সম্ভব হয় না।
এ সম্পর্কে অসাধারণ নসিহত ও আমলের কথা বলেছেন বিশ্ববিখ্যাত ইসলামিক স্কলার শায়খ রাতেব আন-নাবুলসি।
তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল- কী (আমল) করলে ফজরের ওয়াক্তে ঘুম থেকে জেগে ওঠা সহজ হবে
তিনি গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দিকনির্দেশনা মূলক নসিহত পেশ করেন। তা হলো-
১. তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া।
২. ফজরের ওয়াক্ত জাগ্রত হওয়ার বিশুদ্ধ নিয়ত থাকা।
এ প্রসঙ্গে শায়খ বলেন, বিষয়টি বাড়িয়ে বলা নয়; বরং যদি কেউ ভোর ৪টায় জেগে ওঠার জন্য সময় নির্ধারণ করে; তবে সে অবশ্যই ৪টা বাজার এক মিনিট আগে হলেও জেগে ওঠবে। (ইন শা আল্লাহ!)
কারণ আল্লাহ তাআলা যখন কোনো বান্দার ফজরের ওয়াক্তে জেগে ওঠার একনিষ্ঠতা দেখবে; তখন কোনো অ্যালার্ম বা সংকেত ছাড়াই ওই বান্দা আল্লাহর ইচ্ছায় জেগে ওঠবে।
শায়খ রাতিব আরও বলেন, বিজ্ঞানের গবেষণায় একটি বিষয় প্রমাণিত যে, মানুষের মস্তিষ্কেও অ্যালার্ম বা সংকেত আছে। সেটি এমন-‘যদি কোনো মানুষের পূর্ব নির্ধারিত সময়ে জরুরি কোনো কাজ থাকে, তখন দেখা যায় নির্ধারিত সময়ে এক ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় আগে ঘুম ভেঙে যায়। যদিও ওই ব্যক্তি এক ঘণ্টার কিছু আগে পরে ঘুমায়। আর অবশ্যই এটাই ঘটে থাকে।
সুতরাং মনে রাখতে হবে, যখন আল্লাহ তাআলা বান্দার ফজরে ওঠার ব্যাপারে একনিষ্ঠতা দেখবে; তবে আল্লাহর ইশারায় ওই ব্যক্তি ফজরের ওয়াক্তের আগেই জেগে ওঠবে। আর এ কারণেই-‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাআতের সঙ্গে পড়লো সে সন্ধ্যা পর্যন্ত আল্লাহর জিম্মায় থাকবে। আর যে জামাআতে ইশার নামাজ পড়বে; সে সকাল পর্যন্ত আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকবে।’
ফজরের সময় জেগে ওঠার দোয়া তবে ফজরের সময় জেগে ওঠার নিয়তে অনেক ইসলামিক স্কলারগণ ঘুমাতে যাওয়ার আগে কুরআনুল কারিমের একটি আয়াত পড়তেন।
لَهُمُ الْبُشْرَى فِي الْحَياةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ لاَ تَبْدِيلَ لِكَلِمَاتِ اللّهِ ذَلِكَ هُوَ
الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
উচ্চারণ : ‘লাহুমুল বুশরা ফিল হায়াতিদদুনইয়া ওয়া ফিল আখিরাতে লা তাবদিলা লিকালিমাতিল্লাহি জালিকা হুয়াল ফাউযুল আজিম।
অর্থ : ‘তাদের জন্য সুসংবাদ দুনিয়ার জীবনে ও পরকালীন জীবনে। আল্লাহর কথার কখনো হের-ফের হয় না। এটাই হল মহা সফলতা। (সুরা ইউনুস : আয়াত ৬৪)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, ফজরের ওয়াক্তে ওঠে জামাআতে নামাজ পড়ার জন্য সন্ধ্যা আগে আগে ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করা। ফজরের সময় জেগে ওঠার একনিষ্ঠ নিয়ত করা। ইসলামিক স্কলারদের পড়া এ আয়াতটি পড়ে ঘুমাতে যাওয়া।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়াসহ জেগে ওঠার বিশুদ্ধ নিয়ত ও কুরআনের এ আয়াতের আমল করার তাওফিক দান করুন। ফজরের ওয়াক্তে ঘুম থেকে জেগে ওঠে জামাআতে ফজর নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।