এই যেন বাংলাদেশে মার্কিন সংগীত শিল্পী মাইকেল জ্যাকশন সেজে স্যুট, বুট, টাই, জুতা, বেল্ট, ঘড়ি ও সানগ্লাস পরে রিকশা চালাচ্ছেন। শুনতে অবাক লাগলেও মো. শফিক শিকদার এই কাজটাই করে চলেছেন। বছরের পর বছর ধরে তাও বাংলাদেশে! মাইকেল জ্যাকশন সেজে যিনি রিকশা নিয়ে ঘুরে বেড়ান শহরের এ মাথা থেকে ওমাথা।
মো. শফিক শিকদার মাসের ৩০ দিনের মধ্যে পড়েন চল্লিশ রংয়ের পোশাক। রয়েছে ৩২ জোড়া চশমা, ২৪টি হাতঘড়ি, ২৫ জোড়া সু, ১৯ জোড়া টাই এবং ৯টি টুপি। কথায় কথায় বলেন ইংরেজিও।
১৯৯৬ সালে ঢাকা থেকে কুমিল্লা আসেন শফিক। প্রথমে নগরীর টিক্কাচর এলাকায় বাঙ্গারি মালামাল পরে হোটেল ব্যবসা শুরু করেন। গত এক দশক থেকে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। বিয়ে করেছেন কুমিল্লায়। এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সুজানগর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
পাড়া, প্রতিবেশীসহ কুমিল্লা শহরের লোকজন তাকে মাইকেল শফিক নামেই ডাকেন। বাংলা হিন্দি গানে রিকশার যাত্রীদের খুশি রাখেন। যাত্রীরা খুশি হয়ে দেন টাকা উপহার, কেউ তোলেন সেলফি। স্বপ্ন তার ছোট পর্দায় কাজ করা।
রিকশা চালক শফিক শিকদার বলেন, মানুষের অনেক ধরণের শখ ও ইচ্ছে থাকে । আমার শখ হলো সুন্দর সুন্দর নতুন জামা কাপড় ক্রয় করা। আমি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে চলি। এ অভ্যাস বিয়ের আগ থেকেই। মানুষ আমাকে মাইকেল বলে ডাকলে খুশি হই। নিজের গাড়ি, কোনো দেনা নাই। মেয়েটা পড়ে, ছেলে হোটেলে কাজ করে। আমার সুখের সংসার। প্রথম যখন স্যুট, বুট, টাই পরে কুমিল্লা শহরে রিকশা চালাতাম, মানুষ গাড়িতে উঠতো না ভয়ে। মানুষ আমারে ডিবি পুলিশ মনে করতো। প্রথম দুই তিন মাস তেমন ভাড়া পাইনি এ পোষাকের কারণে। এখন আল্লার রহমতে অন্য চালকদের থেকে ভালা টাকা রোজকার করি। আবার খরচ হয়ে যায়।