ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডাকসু’র সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার অভিযোগ প্রমাণ হয়নি বলে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই।
৩ অক্টোবর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক ফরিদা পারভীন লিয়া এ প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনটি শুনানির জন্য আগামী ১৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাংলা অভিধানে ‘দুশ্চরিত্রাহীন’ বলে শব্দের ভুক্তি নেই
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাদিনীকে উদ্দেশ করে বিবাদী (ভিপি নুর) কর্তৃক প্রকাশিত দুশ্চরিত্রাহীন শব্দটির আভিধানিক অর্থ সংগ্রহের জন্য বাংলা একাডেমির পরিচালক বরাবর পত্র পাঠানো হয়। পরে বাংলা একাডেমি দুশ্চরিত্রাহীন শব্দটি সম্পর্কে মতামত দেয়। সেখানে বলা হয়, বাংলা অভিধানে দুশ্চরিত্রাহীন বলে শব্দের ভুক্তি নেই। প্রকৃতপক্ষে এ রকম কোনো শব্দ বাংলা ভাষায় নেই। দুশ্চরিত্রাহীন শব্দটির অর্থ যদি করা হয় তাহলে এর অর্থ হয় উন্নত চরিত্রের অধিকারী বা সদাচারী বা সৎ স্বভাব বিশিষ্ট।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, নুরুল হক নুরের ফেসবুক আইডি ডিজিটাল ফরেনসিক টিমের মাধ্যমে পরীক্ষা করে মতামত নেওয়া হয়। পর্যালোচনায় দেখা যায়, নুরুল হক ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর বাদীকে উদ্দেশ করে ‘ছি! আমরা ধিক্কার জানাই এত নাটক যে করছে সে দুশ্চরিত্রাহীন। ধর্ষণের নাটক করছে স্বেচ্ছায় একটি ছেলের সাথে বিছানায় গিয়ে’ নামে যে বক্তব্যটি প্রচার করেছেন বলা হয়েছে এমন কোনো বক্তব্য তার ফেসবুকে পাওয়া যায়নি। এ জন্য নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫ (১)ক, ২৯(১) ৩১(২) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়নি।
গত বছরের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে এক শিক্ষার্থী মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।
এর আগে গত বছরের ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষার্থী নুরসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণের সহযোগিতার অভিযোগ এনে কোতোয়ালী ও লালবাগ থানায় দুটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত বছরের ১২ অক্টোবর দুপুর আনুমানিক আড়াইটার সময় নুর তার ফেসবুক আইডি থেকে বাদীকে চরিত্রহীন বলে স্ট্যাটাস দেয়। যা একটি মেয়ের জন্য খুবই অপমানজনক। আসামি ফেসবুক লাইভে এসে এরকম কথা বলায় বাদীর সুনাম নষ্ট ও মানহানি হয়। যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(১)/ক, ২৯(১) ও ৩১(২) ধারায় অপরাধযোগ্য।