ফুটবলে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে নারী ফুটবল দল। প্রথমবারের মতো জিতেছে সাফ ফুটবলের শিরোপা। তাঁদের সাফল্যে আনন্দে ভাসছে গোটা দেশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে বন্দনা। খেলোয়াড়দের বাড়িতে, গ্রামে, শহরে চলছে উল্লাস।
চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি নিয়ে আগামীকাল ২১ সেপ্টেম্বর বুধবার দেশে ফিরছেন জাতীয় দলের ফুটবলাররা। বেলা ১টা ৫০ মিনিটে সাবিনা-কৃষ্ণাদের বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। মেয়েদের সংবর্ধনার জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে ছাদ খোলা বাস। সেটিতে করেই শহর ঘুরবেন চ্যাম্পিয়ন মেয়েরা।
নারীদের সাফ চ্যাম্পিয়ন ও ফেসবুকে উৎফুল্লদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন ইসলামিক বক্তা আহমাদুল্লাহ। তার স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো –
মহিলা ফুটবল দলের শিরোপা জেতায় যারা অতি উৎফুল্ল, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় পর্দানশীন মেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করার ঘটনায় তাদের উৎফুল্ল হতে দেখা যায় নি কেন? লক্ষ্য যদি নারীর উন্নতি হয় তাহলে দ্বিতীয় ঘটনায় কেন অভিনন্দন জানানো হয় না?
যারা নারী ফুটবলারদের দিয়ে এদেশে ‘ধর্মবিদ্বেষ’ কায়েম করতে চাইছেন, তাদের ভাবখানা এমন যেন মহিলা ফুটবল দল নেপালের বিরুদ্ধে খেলতে নামে নি, বরং ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছিল! এ ইস্যুতে গতকাল থেকে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে আলেম সমাজ ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অবমাননা করে যেসব জঘন্য কার্টুন ছড়ানো হচ্ছে তা সমাজকে বিশৃঙ্খল করার অপপ্রয়াস।
বাস্তবতা হলো, এদেশের মানুষ ধর্মপরায়ণ। খেলোয়াড়রাও এর বাহিরে নন। আপনারা যাদের ‘ইউজ’ করে ইসলামবিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন, তাদের একজন আল্লাহর উপর ভরসার কথা লিখে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। আরেকজন মাকে নামাজ-রোজা করতে বলেছেন। কখনো আবার পুরো দল সিজদায় লুটিয়ে পড়ে। এ থেকে পরিষ্কার যে, তারা মুসলমানের সন্তান। তারা আমাদেরই বোন। হয়তো ইসলাম সম্পর্কে সঠিক ধারণা তাদের নাই। যারা পাহাড়ী আছেন, তারাও আমাদের অংশ।
তাছাড়া এসব মেয়েরা নিতান্ত গরীব ঘরের সন্তান। যদি তারা একটু সচ্ছল ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতেন তাহলে তাদের কয়জন ফুটবলকে পেশা হিসেবে বেছে নিতেন সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ বিষয়। সুতরাং ‘নারীবাদ’-এর মতো বড়লোকি তত্ত্ব তাদের জীবনে অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বহীন।
অতএব, এদের দিয়ে ইসলাম বিদ্বেষ ও আলেমদের প্রতি ঘৃণার চাষাবাদ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের এই দেশে সফল হবে না। বরং তাদের মধ্যে সামান্য দা’ওয়াতী কাজ করা গেলে এরা একেকজন হাজারো মানুষের হেদায়েতের কারণ হতে পারেন ইন শা আল্লাহ।
তবে এটা সত্য যে, যেটাকে খেলা বলা হচ্ছে সেটা মূলত: একটা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। সেই আগ্রাসনে যাদের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে অনেক সময় তারা নিজেরাও জানেন না যে, কিছু পয়সার বিনিময়ে তাদের কোন্ কাজে ইউজ করা হচ্ছে। মহান আল্লাহ তাদের ও ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ লালনকারীদের হেদায়েত দান করুন।