খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশে যাওয়ার জন্য কোন বাস ও মাইক্রোবাস ভাড়া পাচ্ছেন না মাগুরার বিএনপি নেতা-কর্মীরা। অনেক মালিক বাস দেওয়ার কথা বলে অগ্রিম টাকা নিলেও তা ফেরত দিচ্ছেন।
মাগুরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আকতার হোসেন বলেন, ‘মাগুরা জেলা বিএনপির অধীনে সদর, শ্রীপুর, শালিখা, মহম্মদপুর উপজেলা, দক্ষিণ মাগুরা ও পৌরসভা মোট ছয়টি ইউনিট থেকে বাস ভাড়া করা হয়েছিল। মাগুরা জেলা থেকে প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে খুলনা যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এজন্য প্রতিটি ইউনিট থেকে সাত থেকে আটটি বাস ভাড়া করা হয়েছিল। ২০ থেকে ২৫টি মাইক্রোবাসের মালিকের সঙ্গে খুলনা যাওয়ার ব্যাপারে কথা হয়েছিল। মাইক্রোবাস মালিক বা চালকদের ভাড়ার টাকা অগ্রিম না দেওয়া হলেও অনেক বাস মালিককে অগ্রিম ভাড়া টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন তারা বাস দিতে পারবেন না বলে, টাকা ফেরত দিচ্ছেন।’
শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বদরুল আলম হিরো জানান, শ্রীপুর থেকে খুলনা সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য তিনি আটটি বাস ও পাঁচটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেছিলেন। এজন্য বাস মালিকদের ১৪ হাজার করে ভাড়ার টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন। এখন বাস মালিকেরা ২২ তারিখে খুনায় যেতে পারবে না বলে বাস ভাড়ার টাকা ফেরত দিচ্ছেন। খুলনার সমাবেশ বানচালের জন্য সরকারের চাপে বাস মালিকেরা ভাড়ার টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
মাগুরা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইসহাক মল্লিক জানান, বিএনপি নেতারা তার কাছে গাড়ি ভাড়ার জন্য এসেছিলেন। কিন্তু তিনি অপারগতা প্রকাশ করেছেন। বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার জন্য বাস ভাড়া না দিতে তার উপর কোনো মহলের চাপ বা নিষেধাজ্ঞা নেই। এর আগে কয়েকবার তিনি বিএনপিকে বাস ভাড়া দিয়েছেন। পুলিশ রাস্তা থেকে বাস ঘুরিয়ে দিয়েছে। বাসে মামলা দিয়েছে। এছাড়া তিনি বিএনপির কাছ থেকে ভাড়া টাকাও পাননি। যে কারণে ঝামেলা এড়াতে তিনি বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে বাস ভাড়া দেননি। তবে কোনো মালিক গাড়ি ভাড়ার অগ্রিম টাকা নিয়ে তা ফেরত দিয়েছেন বলে তাঁর জানা নেই।
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও জেলা জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি মোল্লা ইমদাদুর রহমান জানান, তারা লোক মুখে বা প্রচারমাধ্যমে শুনেছেন সরকার ২১-২২ তারিখে খুলনা বিভাগে হরতাল ডেকেছে। তাদের এ ব্যাপারে লিখিত বা মৌখিকভাবে কেউ কিছু জানায়নি। তবে জেলার অনেক মালিক খুলনার ২২ তারিখের সমাবেশে যাওয়ার জন্য বিএনপিকে বাস ভাড়া দিয়েছিলেন। এখন শুনছি এসব মালিক ভাড়া বাতিল করে বায়নার (অগ্রিম) টাকা ফেরত দিয়েছেন।
জেলা মাইক্রোবাস মালিক সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম হোসেন লিটন জানান, তাদের অনেক মালিকের কাছে বিএনপির নেতারা মাইক্রোবাস ভাড়ার জন্য এসেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে বিশেষ অভিযান চলছে, গাড়িতে পুলিশ মামলা দিতে পারে। এ ভয়ে তারা এ ভাড়ায় যেতে রাজি হনননি। যে কারণে মালিকেরা সব ভাড়া বাতিল করেছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহম্মেদ জানান, খুলনায় লক্ষ লোকের সমাবেশ ঠেকাতে সরকারের নির্দেশে তাদেরকে বাস ও মাইক্রোবাস ভাড়া দেওয়া হচ্ছে না। তবে এভাবে বাধা দিয়ে সমাবেশ বানচাল করা যাবে না। অলরেডি আজ থেকেই নেতাকর্মীরা খুলনা যাওয়া শুরু করেছেন। ২২ তারিখে নসিমন, করিমন, মোটরসাইকেল প্রয়োজনে পায়ে হেঁটে নেতাকর্মীরা খুলনা যাবেন এবং সমাশে সফল করবেন।