কাতার বিশ্বকাপের আসল লড়াইটা বোধধয় শুরু হতে যাচ্ছে। নকআউট পর্বে মাঝারি দলগুলোর বিপক্ষে লড়াইয়ের পর এবার বড় দলগুলো নিজেদের ভেতর লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় কোয়ার্টার ফাইনালে দেখা হচ্ছে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের।
শেষ ষোলোর লড়াইয়ে সেনেগালকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে সাউথ গেটের শিষ্যরা। এদিকে, এমবাপের জোড়া গোলে পোল্যান্ডকে হারিয়েছে ফ্রান্স।
গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলতে এসেছে ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে নান্দনিক ফুটবলে মন ভরিয়েছে বেলিংহাম, কেইনরা। দেখিয়েছে গোল দেয়ার দারুন সক্ষমতা। সেই দলটি নকআউট পর্বে সহজাত খেলা উপহার দিতে পারে কিনা, তাই দেখার ছিল।
খেলার শুরুতেই প্রত্যাশিত ইংল্যান্ডের দেখা মেলেনি। গুছিয়ে নিতে সময় লেগেছে সাউথগেটের শিষ্যদের। সেই সুযোগে এগিয়ে যেতে পারতো সেনেগাল। ইংলিশ ডিফেন্সে চিড় ধরিয়ে, দুর্দান্ত এক শট নিয়েছিলেন দিয়া। গোল হয়নি জর্ডান পিকফোর্ডের দৃঢ়তায়।
ম্যাচের চালচিত্র ঘুরে যেতে বেশি সময় লাগেনি। দারুন সেট আপ ফুটবলে ৩৮ মিনিটে গোল করে ইংল্যান্ড। বেলিংহামের নিখুঁত পাস থেকে স্কোরিংয়ে ভুল করেননি জর্ডান হেন্ডারসন।
মোমেন্টাম ফিরে পেয়ে আগ্রাসী হয়ে ওঠে ইংল্যান্ড। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আবারো গোল। ফিল ফোডেনের অ্যাসিস্টে, ক্লিনিকাল ফিনিশিংয়ে গোল করেন হ্যারি কেইন।ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বাধিক গোলের রেকর্ড ছুঁতে আর মাত্র ১টি গোল দরকার কেইনের। ৫৩ গোল দিয়ে তার উপরে কেবল ওয়েইন রুনি।
বিরতির পর ফিরে আসার চেষ্টা কাজে আসেনি সেনেগালের। ইংলিশ ডিফেন্স দ্বিতীয়ার্ধে আরো মজবুত। ৫৭ মিনিটে ফিল ফোডেনের অ্যাসিস্টে আসে তৃতীয় গোল। স্কোরশিটে নাম লেখান বুকায়ো সাকা।
৩ গোল হজম করে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি সেনেগাল। দাপুটে জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড।
অন্যদিকে পোল্যান্ডকে ৩-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে দিদিয়ের দেশমের দল। জোড়া গোলে জয়ের নায়ক কিলিয়ান এমবাপে। ম্যাচের ৪৪ মিনিটে এমবাপের ক্রসে ম্যাচের প্রথম গোল করেন জিরু। জাতীয় দলের জার্সিতে গড়লেন নতুন রেকর্ড।
থিয়েরি অঁরিকে টপকে ফ্রেঞ্চ ইতিহাসের জাতীয় দলের জার্সিতে সর্বোচ্চ গোলদাতা জিরু। এখন পর্যন্ত করেছেন ৫২টি গোল ।
বিরতির পর গোল পরিশোধে মরিয়া পোল্যান্ড, মাঝেমধ্যেই ফরাসি রক্ষণে আতঙ্ক তৈরি করেছিল, তবে গোলরক্ষক হুগো লরিসকে ফাকি দিতে পারেনি।
ম্যাচের ৭৪ মিনিটে আবারো এমবাপে ম্যাজিক, প্রায় ১০ গজ দূর থেকে ডান পায়ের শটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন এমবাপে…
ম্যাচের যোগ করা সময়ে নিজের জোড়া পূর্ণ করে ২৩ বছর বয়সী এই ফরাসী স্ট্রাইকার। আসর ৫ গোল সাথে দুই অ্যাসিস্ট নিয়ে গোল্ডেন বুট জয়ের দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে গেলেন তিনি।
ম্যাচের অন্তিম মুহুর্তে পেনাল্টি থেকে একটি গোল শোধ করেন লেভানডভস্কি। গোলকিপার গোললাইন ছেড়ে বেরিয়ে আসায়, পোলিশ তারকার নেয়া প্রথম শটটি বাতিল হয়। দ্বিতীয় চেষ্টায় সফল হন লেভানডস্কি। তাতে অবশ্য কেবল ব্যবধানই কমেছে।
৩-১ গোলের জয়ে নিশ্চিত হয় ফ্রান্সের কোয়ার্টার ফাইনাল। অন্যদিকে সেনেগালকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টারে উঠে ইংল্যান্ড। এবার কোয়ার্টারে মুখোমুখি হচ্ছে এ দুই জায়ান্ট। লড়াইটা যে হবে বাঘে-সিংহে সেটা বলাই বাহুল্য।
১৯৮২ সালের বিশ্বকাপের পর আর কোনো বিশ্বকাপে দেখা হয়নি ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের। সেবার ফ্রান্সকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড।