রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষ চলে। এতে একজন নিহত এবং অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিকেলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে থাকা বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বাইরে বের হন। এসময় একে একে কেন্দ্রীয় নেতাদের আটক করতে থাকে পুলিশ।
তবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করেনি পুলিশ। তিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে তার সঙ্গে রয়েছেন ব্যক্তিগত সহকারী ইউনুস আলি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবেদ রেজা। এছাড়া আশপাশে সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে ঘিরে রয়েছেন।
জানা গেছে, সংঘর্ষ থামার পর বিকেল ৪টার দিকে কার্যালয় থেকে বের হন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী। তার সঙ্গে ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল। তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছেন বলে রওয়ানা করেন। পায়ে হেঁটে কিছুদূর এগোতেই গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা তাদের দুজনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
এরপর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সন্ধ্যা সোয়া ৫টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে পুলিশ। ভেতরে ঢুকে মূল ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘসময় ধরে কার্যালয়ের ভেতরে অভিযান চালিয়ে নেতাকর্মীদের বের করে আনে তারা। এসময় ভেতরে থাকা দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিমসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে যখন পুলিশ অভিযান শুরু করে, তখন সেখানে আসেন মির্জা ফখরুল। তাকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। অনেক চেষ্টা করেও তিনি কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে পারেননি। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন বলে জানান। তবুও তাকে কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে তিনি কার্যালয়ের প্রবেশপথের সামনে বসে পড়েন। তার সঙ্গে সেখানে অবস্থান নেন ব্যক্তিগত সহকারী ইউনুস আলি ও বিএনপি নেতা আবেদ রেজা।
এদিকে, নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বসে থাকা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। দলীয় কার্যালয় থেকে কেন্দ্রের শীর্ষপর্যায়ের নেতাসহ অন্তত দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’